ঢাকা    সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪   রাত ০৯টা ৪৯ মিনিট   গণমাধ্যমের শিরোনাম

এফবিসিসিআইতে সরাসরি নির্বাচন চান সাধারণ সদস্যরা

প্রকাশক: সমকাল

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পরিচালনা পর্ষদে মনোনীত পরিচালক প্রথা বাতিল করে সরাসরি ভোটের আয়োজন ও নীতিমালায় পরিবর্তন আনাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ সদস্য ও বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা। একই সঙ্গে সংস্কার ছাড়া কোনোভাবেই নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শনিবার রাতে রাজধানীর পল্টনে ফার্স হোটেলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানান তারা। সাধারণ পরিষদের অধিকার আদায়ে সংস্কার করার লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করেন এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ সদস্যরা।

সভায় বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারের ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য রাখেন। তারা ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈষম্যহীন এফবিসিসিআই গড়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

সভায় জানানো হয়, বিগত ১৫ বছর এফবিসিসিআইর কার্যক্রম, ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প ও সেবা খাতের স্বার্থ সার্বিকভাবে পরিচালিত হয়নি বরং অনির্বাচিত ও একদলীয় স্বৈরাচারী সরকারের তোষামোদি, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলসহ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর ছিল। রাজনৈতিক মদদপুষ্ট কিছু অসাধু অব্যবসায়ী এফবিসিসিআইর অফিসকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করে বিভিন্ন বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়িয়েছেন।

এ সময় ফেডারেশনে কী কী সংস্কার আনা যায় তা লিখিতভাবে সবাইকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি আবুল কাসেম হায়দার বলেন, এফবিসিসিআইতে পরিচালক ৮০ জন। এরমধ্যে ৫৭ জনই মনোনীত পরিচালক। যেখানে পরিচালক বেশি থাকবে সেখানে বেশি মতানৈক্য তৈরি হবে। ফলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে না। তাই সরাসরি ভোটের মাধ্যমে পরিচালক নির্বাচন করতে হবে।

সালমান এফ রহমানের অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর তার (সালমান এফ রহমান) বর্তমান পরিস্থিতি দেখে কষ্ট পাচ্ছেন। তাই ভবিষ্যতে আর কোনো ব্যবসায়ী বন্ধুর যেন এ রকম পরিস্থিতি না হয় সেজন্য সরকারকে তেলমারার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ফেডারেশনে লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।

ব্যবসায়ী নেতা ও ফেডারেশনের সাধারণ সদস্য জাকির হোসেন নয়ন বলেন, স্বৈরাচার সরকারের পতনে ছাত্র-জনতা আন্দোলন শুরু করার পর তৎকালীন সরকার গণহত্যা চালায়। এরপর গত ২৩ জুলাই এফবিসিসিআইয়ের নেতৃত্বে শীর্ষ ব্যবসায়ীরা সাবেক সরকারের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছেন। তারা আমৃত্যু সরকারের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাই জুলাই-আগস্টের গণহত্যার দায় ব্যবসায়ী নেতারা এড়াতে পারেন না।

সাধারণ সদস্য গিয়াস উদ্দিন খোকন বলেন, ফেডারেশনে আর কোনো দরবেশ দেখতে চাই না। এখানে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। হাটখোলা ভবন নিয়ে ছিনিমিনি করতে দেওয়া যাবে না। 

এফবিসিসিআইর সাধারণ সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, ফেডারেশনকে পোস্টমর্টেম করে শয়তানের আত্মা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেটা বের করতে হলে আবার পোস্টমর্টেম করতে হবে। যোগ্য লোকদেরকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে হবে।

সাবেক পরিচালক মাহবুব ইসলাম রুনু বলেন, অটো পরিচালক বাদ দিতে হবে, তা না হলে কিছু হবে না। এফবিসিসিআই নতুন ভবন রপ্তানিকারকদের দিতে হবে। কোনো ব্যক্তিখাতে যেন না যায়। সংস্কার না হলে কেউ নির্বাচনে অংশ নেব না। 


সভায় কয়েকটি দাবি জানান তারা  
সভাপতি, সহ সভাপতি, পরিচালক সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। মনোনীত প্রথা বিলুপ্ত করতে হবে। খাত ভিত্তিক কোনো নির্বাচন করা যাবে না। পরপর দুইবারের বেশি কেউ পরিচালক হতে পারবেন না। সপ্তাহে দুই দিন সাধারণ সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। যাতে তারা তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারেন।